মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের কথা তো শুনেই থাকবেন ব্যবসার দিক থেকে দেখতে গেলে এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা একদম শীর্ষস্থানে রয়েছে। বর্তমানে পুরো ভারতের মধ্যে ৪০ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ ব্যবসায়ী মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের। রাজস্থানের মাড়োয়ার অঞ্চল থেকে উঠে এসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা করার জন্য এরা মাড়োয়ারি সম্প্রদায় নামে পরিচিত। এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা ব্যবসার দিক থেকে পুরো দেশ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
আগেকার দিনের যে সকল মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের বয়স্ক ব্যক্তিরা রয়েছে তারা মে পড়াশোনার দিক থেকে খুবই উন্নত তা কিন্তু নয়। এদের তুলনায় বাঙালিরা উচ্চশিক্ষিত এবং মডার্ন কিন্তু ব্যবসার দিক থেকে বাঙালিরা এদের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে। মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা কিভাবে ব্যবসার দিক থেকে অন্যান্য সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিদের ছাপিয়ে গিয়েছে? তাদের ব্যবসা করার ফর্মুলা কি? এবং বাঙালিরা উচ্চশিক্ষিত হয়েও কেন ব্যবসার দিক থেকে অতটা উন্নত নয় জানতে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মাড়োয়ারিদের ধনী হওয়ার রহস্য?
মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই বৈশিষ্ট্য গুলি থাকার কারণে তারা আজ ব্যবসার দিক থেকে পুরো দেশ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এবার দেখে নেওয়া যাক মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
(১) মাড়োয়ারিরা যে খুব একটা দামী কাপড় জামা পড়তে পছন্দ করেন তা কিন্তু নয় তবুও তারা হলুদ ধাতু অর্থাৎ সোনার প্রতি খুবই আকৃষ্ট। তাদের হাতের আঙ্গুলে সোনার আংটি এবং গলায় সোনার চেন থাকছেই।
(২) মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা খুব মিষ্টি করে কথা বললে আপনি যদি এদের সঙ্গে কথা বলেন তাহলে বুঝতে পারবেন। তাদের এই মিষ্টি করে কথা বলার ধরনটা ব্যবসার ক্ষেত্রে খুবই কাজে লাগে।
(৩) মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা টাকা পয়সার এবং ব্যবসার দিক থেকে দেশের শীর্ষস্থানে রয়েছে এই সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিরা কখনোই ইমোশনাল হয়ে বা আবেগের বশে কোন সিদ্ধান্ত নেই না। আমাদের অনেক সময় ইচ্ছে হয় থেকে দামি মোবাইল দামি গাড়ি কেনার আমরা টাকা-পয়সার পড়া না করে দামে গাড়ি কিংবা দামি মোবাইল কিনে ফেলে কিন্তু এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা কখনোই ইচ্ছের বসে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে না।
(৪) এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা টাকা এবং সময়ের মূল্য খুব ভালোভাবে বোঝেন। তাই এরা জানেন কিভাবে টাকা বাঁচাতে হয় এবং কিভাবে সময় বাঁচাতে হয়। এই সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিরা টাকা এবং সময়ের সদ্ব্যবহার করতে জানে। এ ধরুন বাচ্চার শরীর খারাপ হয়েছে তাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়ে বাজারের কেনাকাটা সহ আরও কোনো কাজ থাকলে একসাথে সবকিছু সেরে ফেলেন অর্থাৎ এরা যতটা সম্ভব সময় বাঁচানো যায় তার চেষ্টা করেন।
(৫) এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা পরিবারের ব্যবসার মধ্যেই থাকে। অর্থাৎ ধরন বাবার মিষ্টির দোকানে রয়েছে সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির সন্তানেরাও সেই মিষ্টির দোকানে কাজ করে এক্ষেত্রে কোনোরকম লেবার কস্ট লাগছে না। এবং পরিবারের ব্যবসার জন্য সবাই মন প্রাণ দিয়ে ব্যবসাকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। যেহেতু এই সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিদের ব্যবসা পরিবার কেন্দ্রিক তাই পরিবারের ছোট ছোট সদস্যরাও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকতে থাকতে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সময় একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন।
(৬) Demart, Zomato, Myntra এর মতো বড় বড় ব্যবসাগুলি এ সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের ব্যবসা। এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা তাদের ব্যবসার উপর খুবই ভরসা করে, তা ব্যবসায় লাভ হোক বা লোকসান তারা জানে লং টার্মের ক্ষেত্রে ব্যবসায় উন্নতি আসবেই।
অবশ্যই পড়ুন » মেয়েদের জন্য সরকারি স্কিম! কন্যা সন্তানের পড়াশোনা ও বিয়ের খরচ পাবেন এই স্কিমগুলিতে।
(৭) এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা একবার যে ব্যবসায় নেমে পড়েন সেই ব্যবসায়ী চালিয়ে যান। পরিবারের কেউ একজন যদি কাপড় দোকানের ব্যবসা বা মিষ্টি দোকানে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাহলে পরবর্তী প্রজন্মরাও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকে। এ সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা তাদের ব্যবসা থেকে যা মুনাফা পায় সেই টাকা অন্য ব্যবসা দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে যত টাকা ইনভেস্ট করে সেই পরিমাণ টাকা তাদের নিজেদের ব্যবসার উপরও ইনভেস্ট করে।
(৮) মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা তাদের ব্যবসার কানাকড়ি হিসাব নিকাশ করেন। ব্যবসায় কত টাকা লাভ হচ্ছে, ব্যবসার জন্য কত টাকা খরচ হচ্ছে সবকিছু খাতায় লিখে রাখতে বেশি পছন্দ করেন। এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তির অধীনে যদি কোন ব্যক্তি কাজ করেন এবং কোনদিন যদি ১০ টাকা ধার করেন তাহলেও সেটা এরা লিখে রাখেন।
(৯) এই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা সোনা এবং সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করতে বেশি পছন্দ করেন কারণ তারা জানেন ভবিষ্যতে সম্পত্তি এবং সোনার দাম নিশ্চিতভাবে বৃদ্ধি পাবে। শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলেও ইনভেস্ট সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে তাই তারা সম্পত্তি এবং সোনা কিনে রাখতে পছন্দ করেন।
(১০) এ সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিরা সুদ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। এরা যদি কোন ব্যক্তিকে টাকা ধার দেন তাহলে তারা সুদ সমেত সেই টাকা ফেরত নেন।
অবশ্যই পড়ুন » Sovereign Gold Bonds: এই সরকারি বন্ডে টাকা ডবল হয় FD-র চেয়ে দ্রুত, অনেকেই এটি জানেনা
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের যুক্ত থাকুন 👇
I am personaly so satisfied that I could not in words.