নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য আর্থিক বিনিয়োগ করা প্রত্যেকের জন্যই একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের অবসর পরবর্তী জীবনের জন্য পেনশনের সুবিধা থাকে। তবে বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PPF স্কিমটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি চাকরিজীবীদের অবসর গ্রহণ করার পর আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মস্থান থেকেই পিএফ এর ব্যবস্থা করা হয়। সম্পূর্ণ চাকরির সময়কাল জুড়ে কর্মীদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট কিছু পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হয়। এই টাকা জমা করা হয় কর্মীর পিএফ অ্যাকাউন্টে। এই অ্যাকাউন্টে কর্মীর জমা করা টাকার সমপরিমাণ টাকা জমা করে নিয়োগকারী সংস্থা।
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা
নিজের কর্মজীবন থেকে অবসরের পর এই প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা লাভ করেন গ্রাহক। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড স্কিমের ক্ষেত্রে আবার কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। সেই সুবিধা গুলি হলো।
- এই স্কিম সম্পূর্ণ ভাবে সরকার মারফত পরিচালিত হয়। এই কারণে এই স্কিমে বিনিয়োগ সম্পূর্ন নিরাপদ। এখানে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের ঝুঁকি থাকে না।
- পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা করা টাকার উপর ৭.১ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়।
- সরকারের তরফ থেকে পিপিএফ বিনিয়োগকে ই-ই-ই ক্যাটাগরি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগ করা আসল টাকার পাশাপাশি সুদের সংযোগে মোটা টাকা লাভ করা সম্ভব হয়।
- এই স্কিমে বার্ষিক ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড় পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে দ্বিগুণ সুদের সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে।
অবশ্যই জানুন » PPF Investment: এই ২টি পদ্ধতিতে পিপিএফ-এ বিনিয়োগ করে আপনিও হতে পারেন কোটিপতি
PPF থেকে দ্বিগুণ লাভের উপায়
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড স্কিমে আয়কর আইনের 80C ধারা অনুযায়ী কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়। এই স্কিমে বার্ষিক সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা হলো ১.৫ লক্ষ টাকা। তবে দুটি প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করে ডবল সুদের টাকা লাভ করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে মানতে হবে একটি টিপস। কোনো ব্যক্তি যদি তার নিজের অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি স্ত্রী-র নামে খোলা অ্যাকাউন্ট-এর মাধ্যমেও বিনিয়োগ করেন তবে তিনি দ্বিগুণ সুদের টাকা লাভ করতে পারবেন। কারণ নিজের অ্যাকাউন্ট এবং স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে তার বিনিয়োগের পরিমাণ হবে মোট ৩ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে দুটি অ্যাকাউন্টে সুদও মিলবে দ্বিগুণ।
তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে এই দুই অ্যাকাউন্ট থেকে আলাদা আলাদা সুদ পাওয়া যাবে ঠিকই। কিন্তু আয়কর আইন অনুসারে এই দুটি অ্যাকাউন্টের যে কোনো একটিঅ্যাকাউন্টেই করছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে। অর্থাৎ দুটি অ্যাকাউন্ট এর ক্ষেত্রে গ্রাহক কর ছাড়ের দাবি করতে পারবেন না। এটি ই-ই-ই ক্যাটাগরি হওয়ায় সুদ এবং ম্যাচিউরিটির পরিমাণের উপর করছাড়ও পাবেন গ্রাহক।
আয়কর আইনের ৬৪ ধারা অনুসারে স্ত্রীর পাওয়া উপহার বা টাকা স্বামীর আয়ের সঙ্গে যোগ হয়। এই আয়কে আয়কর আইনের ভাষায় বলা হয় ‘ক্লাবিং’ পদ্ধতি। তবে PPF স্কিম ই-ই-ই ক্যাটাগরি যুক্ত হওয়ায় এক্ষেত্রে ক্লাবিং ও সম্পূর্ণ করমুক্ত।
বিনিয়োগের সময়সীমা
PPF অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সময়সীমা হলো ১৫ বছর। গ্রাহককে সম্পূর্ণ ভাবে এই স্কিমের মাধ্যমে লাভবান হতে গেলে ১৫ বছর বিনিয়োগ করতেই হবে। তবে যদি কোন গ্রাহক মেয়াদ শেষের আগেই এই স্কিম প্রত্যাহার করতে চান তবে তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।
অবশ্যই পড়ুন » PPF Mature হয়ে গেলে এই কাজগুলি করতে ভুলবেন না! অবশ্যই জেনে নিন এই তিনটি বিষয় সম্পর্কে।
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇