Bank account fraud with email id: বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে আমরা যত আধুনিকতার থেকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক তত সাইবার প্রতারণার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে জালিয়াতের কবলে পড়ে বহু মানুষকে নানা ধরনের ক্ষতির শিকার হওয়ার নজির দেখা গেছে আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই কারণেই বহু মানুষ বিশেষত ডেবিটকে কেন্দ্র করে অনেকটাই সাবধানতা অবলম্বন করেন। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সময় পিন অপর কাউকে শেয়ার না করা, অচেনা কোন লিংকে ক্লিক করা ইত্যাদি সাবধানতা গুলি সচরাচর আমরা অবলম্বন করলেও নিজের মোবাইলে থাকা ইমেল আইডি সম্পর্কে বিশেষ সতর্ক থাকি না।
ইমেইল আইডি দিয়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি
তবে শুধু ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রেই নয়, বর্তমান যুগে ইমেল আইডির মাধ্যমেও বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার খবর সামনে আসছে। আমরা কখনোই নিজেদের মেল আইডির বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করি না। অন্য যে জায়গায় বা যে কোনো মানুষকে নিজস্ব মেল আইডি দিয়ে দিই এবং নিজের মেল বক্সে অচেনা কোন আইডি থেকে মেল বা কোন লিংক গেলে তা ক্লিক করে ফেলি। এই কাজের ফলেই ঘটে যায় বিপদ।
অনেক সময় যেখানে সেখানে মেল আইডি দেওয়ার ফলে তা নানা মার্কেটিং সংস্থার কাছে ও চলে যায়। আবার বহু মার্কেটিং সংস্থা আছে যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা দিয়ে বেআইনি ভাবে সাধারণ মানুষের মেল আইডি কিনে থাকে। এই গোপন বেআইনি পদ্ধতির মাধ্যমেই আবার সাধারণ মানুষের মেল আইডি চলে যায় হ্যাকারদের কাছে। মেল আইডিতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকলেও তা যদি একবার হ্যাকারদের কাছে চলে যায় সে ক্ষেত্রে তারা হ্যাক করে আপনার ব্যাংক ডিটেলস পর্যন্ত জেনে নিতে পারে।
অবশ্যই পড়ুন » KYC Fraud Prevention: kyc এর নামে OTP জালিয়াতি, RBI জানিয়েছে কীভাবে এটি এড়ানো যায়।
কিভাবে ইমেইল আইডি হ্যাক করে থাকেন প্রতারকরা
হ্যাকাররা ব্রুট ফোর্স মেথড ব্যবহার করে মূলত ই মেল অ্যাটাকের কাজগুলি সম্পন্ন করছে। এই ব্রুট ফোর্স মেথড আবার পাঁচ রকমের। দেখে নিন কি কি পদ্ধতি মেনে পাসওয়ার্ড হ্যাক করে জালিয়াতির চেষ্টা করে হ্যাকাররা।
১) প্রথম পদ্ধতিটি হলো Simple brute force attacks। অনেক সময় আমরা নিজেদের পরিবারের কারো নাম হিসেবে দিয়ে তার সঙ্গে কয়েকটি সংখ্যা যোগ করে দিই। আবার কখনো 1234 বা PASSWORD বা ILOVEYOU এই জাতীয় পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি। হ্যাকাররা সহজেই সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে নজর রেখে বিভিন্ন ধরনের পার্সোনাল ইনফরমেশন পেয়ে যায়। যার থেকে তারা সহজেই পাসওয়ার্ড আন্দাজ করার চেষ্টা করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের পার্সোনাল ইনফরমেশন গুলিকে সংগ্রহ করে ট্রায়াল অ্যান্ড এরর পদ্ধতিতে পাসওয়ার্ড পাওয়ার চেষ্টা করে হ্যাকাররা।
২) দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হল Dictionary attacks। এক্ষেত্রে বর্ণমালার সমস্ত অক্ষর এবং সমস্ত নম্বরকে পারমুটেশন কম্বিনেশন করে পাসওয়ার্ড হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়।
৩) তৃতীয় পদ্ধতিটি হল Hybrid brute force attacks। এটি Simple attacks আর Dictionary attacks এর কম্বিনেশন। হ্যাকাররা একই সঙ্গে দুই ভাবে চেষ্টা করে পাসওয়ার্ড হ্যাক করার।
৪) চতুর্থ ধাপ টি হল Reverse brute force attacks। এই চতুর্থ ধাপে হ্যাকাররা কয়েকটি কমন পাসওয়ার্ড আগে থেকে বেছে নেয়। এবং তারপর খোঁজার চেষ্টা করে সেই পাসওয়ার্ড গুলি কোন কোন ইমেল আইডিতে আছে।
৫) এর পঞ্চম ধাপটি হলো Credential stuffing। এর মাধ্যমেও হ্যাকাররা পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে সক্ষম হয়।
কিভাবে এই জালিয়াতির হাত থেকে মুক্তি পাবেন
এই সমস্ত জালিয়াতের হাত থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা বলেন একাধিক মেল আইডি ব্যবহার করতে এবং সব জায়গায় একই মেল আইডি ব্যবহার না করতে। আপনি পড়াশোনার ক্ষেত্রে, ব্যবসার ক্ষেত্রে, ব্যাংক একাউন্ট এর ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ইমেল আইডি ব্যবহার করুন। এছাড়াও অজানা কোন সাইটে নিজের মেল আইডি না দেওয়া এবং পাসওয়ার্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে আলফা-নিউমারিক উইথ স্পেশাল ক্যারেকটারস এর সাহায্য নিলে এই সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অবশ্যই পড়ুন » QR code scams: অনলাইন পেমেন্ট করার সময় সতর্ক থাকুন, নিমেষেই হয়ে যাবে সব লুট! এইভাবে জালিয়াতি এড়ান
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇