প্রতিটি মানুষই চান নিজের কষ্ট করে উপার্জন করা টাকা কোন একটি নির্দিষ্ট সুরক্ষিত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে রেখে আর্থিক দিক থেকে নিজের ভবিষ্যৎকে সমৃদ্ধ করতে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। বৃদ্ধ বয়সে যখন দৈহিক সক্ষমতা অনেকটাই কমে যায় তখন আর্থিক নিশ্চয়তা না থাকলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রবীণ মানুষদের। এই কারণেই আগে থেকে নিজের সামর্থ্য মত অর্থ বিনিয়োগ করে রাখতে চান প্রতিটি মানুষ। তবে অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ইনকাম ট্যাক্স। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বেশ মোটা পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হয় এই ট্যাক্স এর মাধ্যমে। তবে এই আটটি উপায় অবলম্বন করে প্রবীণ নাগরিকরা ইনকাম ট্যাক্স থেকে বাঁচতে পারেন।
ইনকাম ট্যাক্স থেকে বাঁচতে এই ৮টি উপায় অবলম্বন করুন
১) প্রবীণ নাগরিকদের অর্থ বিনিয়োগ করে রাখার জন্য পিপিএফ বা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অপশন হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতীয় আয়কর আইনের ধারা ৮০সি অনুযায়ী এই স্কিমে কর ছাড়ের সুবিধা উপভোগ করা যায়। এতে কর ছাড়যোগ্য মূল্যের পরিমাণ হলো ১.৫ লক্ষ টাকা।
২) ন্যাশনাল সেভিং সার্টিফিকেট স্কিমে কম ঝুঁকিপূর্ন ভাবে অর্থ বিনিয়োগ করে রাখতে পারেন প্রবীণ নাগরিকরা। এতে এক দিকে যেমন বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের সুবিধা মেলে ঠিক তেমনি আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়।
৩) প্রবীণ নাগরিকরা তাদের ব্যাঙ্ক, কো-অপারেটিভ সোসাইটি বা পোস্ট অফিসে সঞ্চিত আমানত থেকে যে পরিমাণ সুদ অর্জন করেন, আয়কর আইনের ৮০টিটিবি ধারা অনুযায়ী সেই সুদের উপর তারা বছরে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় ছাড় দাবি করতে দেয়। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে এই ছাড়টি আয়কর আইনের ধারা ৮০সি এর অধীনে প্রাপ্ত ১.৫ লক্ষ টাকা ছাড়কে বাদ দিয়ে পাবেন প্রবীণ নাগরিকরা।
৪) স্বাস্থ্য বীমা প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে প্রবীণ নাগরিকরা ৮০ডি ধারা অনুযায়ী বেশ মোটা পরিমাণ কর ছাড় পেতে পারেন। ধারা ৮০ডিডিবি অনুযায়ী ৮০ বছরের উর্দ্ধের প্রবীণ নাগরিকরা সুপার সিনিয়র সিটিজেন হিসাবে চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ছাড় পেতে পারেন।
৫) নিজের অর্থ সুরক্ষিত ভাবে বিনিয়োগ করার জন্য ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম হলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্কিমে পাঁচ বছরের লক ইন পিরিয়ড থাকে। প্রবীণ নাগরিকদের ট্যাক্স সেভিং এর জন্য এই স্কিমটিও অতি গুরুত্বপূর্ণ। এতেও আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুসারে কর ছাড়ের বিশেষ কিছু সুবিধা লাভ করা সম্ভব হয়।
আরোও পড়ুন » GST New Rule: ১ মার্চ থেকে GST এর নিয়েমে বিরাট পরিবর্তন, না জানলে আপনার আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।
৬) সাধারণত ৬০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২.৫ লক্ষ টাকার কর ছাড় এর সুবিধা মেলে। কিন্তু ৬০-৮০ বছর বয়সী প্রবীণ নাগরিকরা সাধারণ গ্রাহকদের তুলনায় ৩ লক্ষ টাকা বেশি ছাড় পান। ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ছাড়ের সীমা হলো ৫ লক্ষ টাকা। এটি করযোগ্য আয় কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
৭) সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম এর অধীনে প্রবীণ নাগরিকরা নিরাপদে নিজেদের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। মার্চ মাসের শেষ ত্রৈমাসিক হিসেবে এতে ৮.২০ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুসারে এতে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়।
৮) ২০২০ সালে পেশ করা বাজেট অনুসারে প্রবীণ নাগরিকরা ৫০০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এই সুবিধা উপভোগ করতে পারেন। পেনশনভোগীরা এর মাধ্যমে করে বোঝা হালকা করতে পারেন।
অবশ্যই পড়ুন » ITR ফাইল দাখিল করার সময় অবশ্যই এই বিষয়গুলি দেখে নিন, নইলে দিতে হবে ১০,০০০ টাকা জরিমানা।
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇