ব্যাংক একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত বিষয়ের ক্ষেত্রে কেওয়াইসি একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কেওয়াইসি (KYC) কথার অর্থ হলো Know Your Customer। অর্থাৎ এর মাধ্যমে যে কোনো আর্থিক সংস্থা তার গ্রাহকের সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ গ্রহণ করে থাকে। তবে বিভিন্ন সময় বারবার গ্রাহকদের কাছ থেকে কেওয়াইসি চাওয়া হলে গ্রাহকদের নানা ভাবে বিভ্রান্তির সম্মুখীন হতে হয়। পাশাপাশি বহু সময়ের অপচয় হয়। এই কারণেই এবার দেশ জুড়ে চালু হতে চলেছে Uniform KYC ব্যবস্থা। দেখে নিন এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
পূর্বের KYC সম্পর্কিত সমস্যা
গ্রাহকদের যে কোনো আর্থিক লেনদেন, আর্থিক বিনিয়োগ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, বীমা পরিষেবা গ্রহণ করা ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রে কেওয়াইসি-র প্রয়োজন হয়। একই ব্যক্তিকে একাধিক বার কেওয়াইসি জমা দিতে হলে প্রচুর কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে ব্যয় হয় অনেকটা সময়। এই সমস্যাগুলি দূর করার জন্যই ফিন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল এর পরামর্শ অনুযায়ী সারা দেশে চালু হতে চলেছে ইউনিফর্ম কেওয়াইসি।
Uniform KYC কি
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন দেশের সর্বত্র সব ধরনের পরিষেবার জন্যই একটি কেওয়াইসি ব্যবহার করা হবে। এই কেওয়াইসি-র নাম ইউনিফর্ম কেওয়াইসি। এই কারণেই FSDC বা Financial Stability and Development Council এর প্রস্তাবে দেশের সমস্ত স্থানে Uniform KYC চালু করতে চলেছে সরকার। এই বিশেষ ধরনের কেওয়াইসি-এর মাধ্যমে মাধ্যমে আর্থিক যে কোনো পরিষেবা বা লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকে শুধুমাত্র একবার কেওয়াইসি করাতে হবে।
আরোও পড়ুন » KYC কি? কেন নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর কেওয়াইসি আপডেট করা জরুরী! জেনে নিন KYC সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য।
খসড়া নির্মাণ
টিভি সোমানাথনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ইউনিফর্ম কেওয়াইসি সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ইউনিফর্ম কেওয়াইসি সম্পর্কিত যাবতীয় নিয়মের একটি খসড়া তৈরি করবে। নির্মলা সীতারামন দেশের মানুষের সুবিধার্থে আর্থিক লেনদেনের নিয়ম কানুন গুলি আরো সহজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই পরামর্শ মেনে নবনির্মিত এই কমিটি ইউনিফর্ম কেওয়াইসির নিয়ম কানুন এবং খসড়া তৈরি করবে।
ইউনিফর্ম কেওয়াইসির কর্মপদ্ধতি
২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছিল CKYCR অর্থাৎ কেন্দ্রীয় কেওয়াইসি রেকর্ডস রেজিস্ট্রি পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অনুসারে আর্থিক দিক থেকে সম্পর্কযুক্ত যে কোন পরিষেবার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের বারবার কেওয়াইসি জমা করতে হবে না। নতুন ভাবে যে পদ্ধতিটি তৈরি করা হচ্ছে তার মাধ্যমে গ্রাহকরা একটি ১৪ সংখ্যার CKYC নম্বর পাবেন। এই নম্বরটি তার পরবর্তী লেনদেন গুলির ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। সেই সঙ্গে গ্রাহকের কেওয়াইসি রেকর্ড SEBI, RBI, IRDAI ও PFRDA সব জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাই কোনোট লেনদেন শুরু করার আগে একবার কেওয়াইসি জমা দিলে পরবর্তীতে আর আলাদা কাগজপত্র সহ কেওয়াইসি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এতে যেমন লেনদেন প্রক্রিয়ার সহজ হবে ঠিক তেমনি গ্রাহকদের বারবার বিভ্রান্তির সম্মুখীনও হতে হবে না।
অবশ্যই পড়ুন » KYC Update: ব্যাংকের KYC আপডেট না করলে কি হবে? আপনার কি কি ক্ষতি হতে পারে অবশ্যই জানুন।
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇