প্রতিটি মানুষই চান নিজের ওপার্জিত অর্থ কোন একটি স্থানে বিনিয়োগ করে রাখতে। কর্মজীবী মানুষদের ক্ষেত্রে আবার কর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু স্কিম চালু করা থাকে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য অবসরের পর যেমন পেনশনের ব্যবস্থা থাকে, বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের শেষ সুবিধা থাকে না। তাই বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। তার কর্মীদের ভবিষ্যতের আর্থিক সুরক্ষার জন্য কর্মীদের বেতন থেকে কিছুটা করে টাকা কেটে রেখে নির্দিষ্ট স্কিম পরিচালনা করে। এমনই একটি স্কিম হল EPF। তবে এমন অনেক স্কিম আছে যেগুলিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে টাকা তুলে নেওয়া যায় না। EPF স্কিমে হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হলে কিভাবে টাকা তুলবেন, এই স্কিমে টাকা জমানোর পদ্ধতিই বা কি, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
EPF কি?
বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্ধ সঞ্চয়কারী স্কিম হলো এমপ্লোয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা EPF। যে সমস্ত বেসরকারি সংস্থার কর্মী সংখ্যা ২০ জনের বেশি, তাদের ক্ষেত্রেই এই স্কিম চালু রয়েছে। এক্ষেত্রে কর্মীদের প্রাপ্ত বেতন থেকে ১২% টাকা কেটে নিয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে জমা করে ওই বেসরকারি সংস্থা। কোম্পানি তরফ থেকেও সমপরিমাণ টাকা জমা করা হয় এই অ্যাকাউন্টে। ফলে একজন বেসরকারি কর্মীর সারা জীবনে জমা করা EPF তার ভবিষ্যতের আর্থিক সুরক্ষা বৃদ্ধি করে।
সুদের পরিমাণ
বেসরকারি সংস্থার প্রতি কর্মী পিছু, ২৪ শতাংশ করে অর্থ প্রভিডেন্ট ফান্ড স্কিম এর মাধ্যমে সরকার লাভ করে। এই টাকার উপরে সরকার ৮.২ শতাংশ সুদ দেয়। প্রতিটি কর্মীর আলাদা আলাদা EPF এর জন্য আলাদা ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর বা UAN দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে সেই কর্মী জানতে পারেন কত টাকা তার অ্যাকাউন্টে আছে।
আরোও পড়ুন » EPFO Rules: একাউন্ট থেকে টাকা তোলা নিয়ে নতুন নিয়ম জারি EPFO এর, বন্ধ হচ্ছে পুরনো প্রক্রিয়া।
EPF এর টাকা তোলার নিয়ম
সাধারণত অবসরের আগে এই টাকা তুলতে পারেন না বেসরকারি কর্মীরা। তবে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে অবসরের আগে অনুমতি নিয়ে টাকা তোলা সম্ভব। যদি বাধ্য হয়ে এই টাকা অবসরের আগে তুলে নিতে হয় সে ক্ষেত্রে সুদের হারের কোন পার্থক্য হয় না। EPF আইন অনুসারে কোন বেসরকারি কর্মী এক বা দু’মাস কর্মহীন অবস্থায় থাকলে তিনি এই টাকা তুলে নিতে পারেন। এছাড়াও বিশেষ কিছু জরুরি অবস্থা যেমন বিয়ে, অসুস্থতা ইত্যাদি কারণে এই টাকা তুলে নেওয়া সম্ভব।
EPF ছাড়া বেসরকারি কর্মীদের অর্থলগ্নির জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্কিম
শুধু EPF এর মাধ্যমেই নয়, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PPF অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে টাকা জমা করতে পারেন বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা। এক্ষেত্রেও সরকারের তরফ থেকে ৮ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়। প্রতি তিন মাস অন্তর আবার এই স্কিমের সুদের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করে সরকার। নূন্যতম ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায় এই স্কিমে। এই স্কিমের মেয়াদ হলো ১৫ বছর। গ্রাহক চাইলে এই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর আরো কিছুটা বৃদ্ধি করতে পারেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে এই স্কিমের ৫০ শতাংশ টাকা তুলে নেওয়া যায় ঠিকই, তবে এই স্কিম থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে টাকা তুলতে গেলে অন্তত ৭ বছর অপেক্ষা করতে হবে।
আরোও পড়ুন » PF Interest Rate Hike: 6 কোটিরও বেশি PF অ্যাকাউন্টধারীদের কপাল খুলেছে, মার্চ থেকে মিলবে নতুন সুদ।
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇