Nominee Rules: সাধারণত যে কোন আর্থিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার সময় একজন নমিনির নাম নির্ধারণ করে রাখেন। কোনো কারণে অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার বিনিয়োগ করার সমস্ত অর্থ পাওয়ার অধিকার থাকে নমিনির। তবে ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে নমিনির অধিকার নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করা হয়। সে ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া হয় নমিনি হলেই তিনি অর্থ বিনিয়োগকারীর সমস্ত টাকা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর উত্তরাধিকারীদের অধিকারও থাকবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের সূত্রপাত হয় আসলে রামচন্দ্র তলোয়ার নামক এক ব্যক্তি তার মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর নমিনি হিসেবে সমস্ত টাকা পাওয়ার অধিকারকে কেন্দ্র করে। ওই ব্যক্তির মায়ের মৃত্যুর পর ব্যাংকের তরফ থেকে নমিনি হিসেবে তার অ্যাকাউন্টে সমস্ত টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তার দাদা। তিনি দাবি করেন তার মায়ের উত্তরাধিকারী তিনিও। তাই এই টাকা পাওয়ার অধিকার তারও আছে। এই কেসের পর সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়দান করে, যাতে বলা হয় নমিনি হলেই সম্পূর্ণ অধিকার তার হয়ে যায় এমন নয়। ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুসারে উত্তরাধিকারীরাই সম্পত্তির মূল মালিকানা লাভ করেন। আজ এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো নমিনি কি এবং মৃত ব্যক্তির অর্থে নমিনির অধিকার কতটুকু?
মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির উপর নমিনির অধিকার কতটুকু
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে লাইফ ইনসিওরেন্স, বীমা পরিকল্পনা ইত্যাদি সমস্ত কিছুতেই অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তিরা একজন নমিনের নাম উল্লেখ করে রাখেন যাতে তার মৃত্যু হলে তার কষ্ট করে সঞ্চয় করে রাখা টাকা নষ্ট না হয়ে তার অধিকার নমিনি পান। তবে এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হয়, নমিনি সব সময় অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তির উত্তরাধিকারী নাও হতে পারেন। যদি কোন অর্থই ব্যক্তি তার একমাত্র সন্তানের নামে নমিনি করেন তবে সেই সন্তান তার উত্তরাধিকারী নমিনি হিসেবে পরিগণিত হবেন। তবে সন্তান থাকা সত্ত্বেও যদি অপর কোনো ব্যক্তিকে নমিনি হিসেবে নির্বাচন করা হয় সে ক্ষেত্রে সেই নমিনি আইনত উত্তরাধিকারী নন।
অর্থাৎ নমিনির প্রধান কাজ কোন মৃত অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যক্তির অর্থ সংগ্রহ করে তার প্রকৃত উত্তরাধিকারীদের সেই বণ্টন করে দেওয়া। উত্তরাধিকার সূত্রে সেই অর্থের মালিকানা ভোগ করার অধিকারী নমিনি হতে পারেন না। যেহেতু নমিনির প্রধান কাজ অর্থ বিনিয়োগকারীর অর্থ সংগ্রহ করে আইনত উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া, ফলে নমিনি যে কোনো পরিচিত ব্যক্তিকেই করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজের সন্তানকে নমিনি করলে সরাসরি তারাই উত্তরাধিকার পাবে। এবং অপর কোন ব্যক্তিকে নমিনি করলে তিনি সেই টাকা সংগ্রহ করে প্রকৃত উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ভাগ করে দেবেন।
১৮ বছর নিচের কোনো নাবালক ও নমিনি হিসেবে যোগ্য হতে পারে তবে সেক্ষেত্রে তার অভিভাবক হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করে যেতে হবে। শ্রীমতি সরাবতী ভার্সেস শ্রীমতি ঊষা দেবীর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে এমন একটি নমিনি সংক্রান্ত বিষয়ে কেসে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল নমিনি হিসেবে শুধু ওই ব্যক্তির স্ত্রীই নন, তার মাইনর উত্তরাধিকারী এবং তার অভিভাবক ও এই টাকা পাবেন। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির টাকাকে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করে তিনজনের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: RBI monetary policy rate – ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেন RBI! কি জানালেন দেখেনিন।
নমিনির প্রকারভেদ
সরকারের নিয়ম অনুসারে সাধারণত ক্লাস I আইনত উত্তরাধিকারী হিসেবে ধরা হয় ১) বিধবা স্ত্রী, ২) ছেলে, ৩) মেয়ে, এবং ৪) মা-কে।যদি কোনো ব্যাক্তির ক্লাস I আইনত উত্তরাধিকারী নেই, তার ক্ষেত্রে ক্লাস II আইনত উত্তরাধিকারীরা নমিনি হতে পারবেন। তারা হলেন ভাই, বোন, নাতি, নাতনি। এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি তার মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকেই তার টাকা দিয়ে যেতে চান সেক্ষেত্রে একটি উইল করে রাখলে আইনি কোনো জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে হবে না। অন্যথায় নমিনির টাকা পাওয়ার অধিকার কে কেন্দ্র করে প্রকৃত উত্তরাধিকারীদের দিক থেকে নানা ধরনের প্রতিরোধ আসতে পারে এবং যা পৌঁছে যেতে পারে আইনি জটিলতা পর্যন্ত।
অবশ্যই পড়ুন » UPI Transactions Limit – ইচ্ছেমতো টাকা লেনদেনের দিন শেষ! এবার থেকে নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারবেন।
এই ধরনের অর্থনীতি সম্পর্কিত তথ্য সহজ বাংলা ভাষায় পেতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন 👇